এ বছরের শীত চলছে। ভুলেও ত্বকের যত্নে ইতি টানবেন না? মোটেই না! ঋতু পরিবর্তনের এই সময়টাতেই বরং বেশি করে ত্বকের যত্ন নেওয়া দরকার। কারণ, এই সময়টায় একদিকে যেমন সকাল-সন্ধে বাতাসে একটা শিরশিরে ঠান্ডা শুকনো বাতাস থাকে, তেমনি বেলা বাড়লেই বেশ গরম পড়ে যায়। ফলে শীতে যেভাবে ত্বকের যত্ন নিয়েছেন, সেটা আরও কিছুদিন চালাতে হবে যতদিন না পুরোপুরি গরম পড়ছে, আবার গরমকালের উপযোগী কিছু যত্নও নিতে হবে। সাধারণত শীতকালে আমাদের যে সমস্যাগুলো দেখা যায়, যেমন শুষ্ক ত্বক ও স্ক্যাল্প, ফাটা গোড়ালি, শুষ্ক ঠোঁট এবং খুশকি, সে সব এই বসন্তেও থেকে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিশেষ করে যাঁদের ত্বক এমনিতেই শুষ্ক বা যাঁদের বয়স তিরিশ থেকে চল্লিশের কোঠায় পড়ে, তাঁদের আরও বেশি করে এই সময়টা যত্ন নেওয়া উচিত।
যাঁদের ত্বক এমনিতেই শুষ্ক, বসন্তেও তাঁরা শীতের শুষ্কতার হাত থেকে পুরোপুরি মুক্তি পান না। তাঁদের জন্য তো বটেই, বাকিদের জন্যও রইল কতগুলো জরুরি পরামর্শ।
ক্রিমযুক্ত প্রডাক্ট ব্যবহার করুন: শুষ্ক ত্বকের রূপচর্চার মূল কথাই হল, ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখা। তার জন্য অবশ্যই ফেস ওয়াশ থেকে শুরু করে মেকআপ পর্যন্ত সমস্ত প্রডাক্টই ক্রিমযুক্ত হওয়া উচিত। সাধারণত এই ধরণের প্রডাক্টগুলিতে তেল থাকে, যা ত্বকের উপর আচ্ছাদন তৈরি করে আর্দ্রতা ধরে রাখে। স্বাভাবিক ও তৈলাক্ত ত্বক যাঁদের, তাঁরা ওয়াটার-বেসড ময়েশ্চারাইজ়ার মাখুন।
সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন: অনেকেই মনে করেন সানস্ক্রিন শুধুমাত্র প্রখর গ্রীষ্মেই ব্যবহার করা উচিত। কারণ একমাত্র গ্রীষ্মের সময়ই ত্বক ট্যান হওয়ার আশঙ্কা থাকে। কিন্তু বসন্তেও সূর্যের যথেষ্ট তেজ থাকে। ইউভি এবং পিএ+++ ব্রড স্প্রেকটাম সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।
তেল মাখুন: শীতে স্নানের আগে তেল মাখার অভ্যাস বসন্তেও ধরে রাখুন। যে কোনও বেবি অয়েল বা অলিভ অয়েল দিয়ে সারা শরীরে মাসাজ করলে ত্বক নরম ও পেলব হবে।
জল খান: সারা শীত ও বসন্তকালে আমাদের জল খাওয়ার পরিমাণ কমে যায়। কারণ শরীর তখন কম ঘামে তাই তেষ্টা কম পায়। কিন্তু এই সময় আপনাকে প্রচুর জল খেতে হবে। জল শরীরের সমস্ত বিষাক্ত পদার্থকে বের করে দিয়ে ত্বকে সজীবতা যোগায়। যদি গলায় কোনও সমস্যা থাকে তাহলে ঈষদুষ্ণ জলও খেতে পারেন
।
অ্যালোভেরার যত্ন: যাঁদের শুষ্ক ত্বক তাঁরা দিনে দু’বার অ্যালোভেরা জেল দিয়ে মুখ পরিষ্কার করুন। যাঁদের স্বাভাবিক ত্বক তাঁরাও এটা করতে পারেন।
গোলাপজলের জাদু: তৈলাক্ত ত্বকে আর্দ্রতা জোগাতে একটা এয়ারটাইট বোতলে 100 মিলি গোলাপ জলের সঙ্গে এক চামচ শুদ্ধ গ্লিসারিন মিশিয়ে ফ্রিজে রেখে দিন। যখনই ত্বকে শুষ্কতাজনিত টান অনুভব করবেন, এই মিশ্রণ তুলোয় করে লাগাবেন।
ভিতর থেকে যত্ন: ত্বকের যত্ন শুধু বাইরে থেকে নিলেই চলবে না, যত্ন নিতে হবে ভিতর থেকেও। মাঝে মাঝে হালকা এক্সারসাইজ় করুন, সকালে বা বিকেলে হঁাটতে বেরোন। এক্সারসাইজ় করলে আপনার শরীরে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পাবে এবং কোষ সজীব থাকবে। প্রচুর পরিমাণে তাজা শাকসবজি এবং কলা, আপেল, পাকা পেঁপে এবং কমলালেবু ইত্যাদি ফল খান। তেলমশলা এবং বাইরের খাবার যতদূর সম্ভব এড়িয়ে চলুন
গরম জলে স্নান নয়: যেহেতু এখন শীতের তীব্রতা একেবারেই নেই, তাই গরমজলে স্নান করা ধীরে ধীরে কমিয়ে আনুন। বেশি গরম জল ত্বকের আর্দ্রতাটুকুও শুষে নেবে। ঠান্ডা জলে স্নান করতে ইচ্ছে না করলে এক মগ গরমজল মিশিয়ে ঠান্ডাটা কাটিয়ে নিন।