পশ্চিমবঙ্গ

রবিবার রবি বাড়ি ফিরবে, তারই অপেক্ষায় মা

রবিবার রবি বাড়ি ফিরবে, তারই অপেক্ষায় মা। মাটির প্রলেপ দেওয়া বাড়িতে সূর্যের আলো ঢোকে ঠিকই, বেশিরভাগটাই অন্ধকার। সেই অন্ধকার শেষে রবির আলোয় উদ্ভাসিত হতে চায় শুধু রবি হাঁসদার মা’ই নন, গোটা গ্রাম। ছেলেকে স্নেহচুম্বন দিতে চান মা তুলসী হাঁসদা। কতদিন সামনে পাননি ছেলেকে। একমাস আগে সেই এসেছিল। এরপর সন্তোষের ক্যাম্পে ব্যস্ত। এবার মাথা উঁচু করেই রবি আসবেন। তিনি বাংলাকে সন্তোষ জিতিয়েছেন, সেইসঙ্গে জিতিয়েছেন যেন মায়ের লড়াইও! খুশিতে কেঁদেছেন মা তুলসী হাঁসদা। কষ্টেও কেঁদেছেন। সব হল, রবির বাবা দেখে যেতে পারলেন না কিছুই। পূর্ব বর্ধমান। ভাতার থানা। সেখানের অজ মশারু গ্রাম। কেই বা নাম জানত! সেখানেই লড়াই শুরু বড়ে মিঞার রেকর্ড ভেঙে বাংলাকে সন্তোষ ট্রফি চ্যাম্পিয়ন করার কারিগর রবি হাঁসদার। আচমকা বাবা চলে যাওয়ার পর, আদিবাসী এই তরুণের স্বপ্নও ভেসে যেতই। আগলে রেখেছিলেন মা। মাঝিপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভাগ্যিস ২ হাজার টাকার রান্নার কাজ পেয়েছিলেন! দিনমজুরি খেটেই মেয়ে রাসমণি হাঁসদার বিয়ে দিয়েছেন। ছেলেকে ফুটবল খেলতে উৎসাহ জুগিয়েছেন। বল খেলেছেন, সেইসঙ্গে পড়াশুনোও চালিয়ে গেছেন। বলগোনা হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক পাশের পর অবশ্য পড়া হয়নি রবির। ভাতারের ক্লাবে খেলার পর শেষ তিনবছর কলকাতার বিভিন্ন ক্লাবেই খেলছেন। রবির মা তুলসী হাঁসদা বলেন, ‘রবির বড় ইচ্ছে ছিল মোহনবাগান ক্লাবে খেলার। কি জানি সেই স্বপ্ন পূরণ হবে কিনা’! তবে খুশি ফুটবল খেলেই জীবনটা দাঁড় করাতে পেরেছে ছেলে। না’হলে যে ছেলে-বউমা-নাতনিদের চিন্তায় ঘুম ছুটতো তাঁর। রবি ফুটবলার, রবি এরপর পুলিশও হবে। মা তুলসী হাঁসদা সত্যি ঠিকঠাক বিশ্বাস করতে পারছেন না। সব সত্যি! স্বপ্ন সত্যি হয় তাহলে!

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Adblock Detected

Please Turn Off Your Ad Blocker.