হাসিনা সরকারের পতনের পরে পাকিস্তানপন্থী মৌলবাদীরা ও বিএনপি ওই দেশের প্রধান প্রশাসক। অবশ্য ‘পুতুল’ হিসাবে চেয়ারে ইউনুসকে বসিয়ে রেখেছেন। তারা নানাভাবে দেশের মানুষকে ভারত তথা হিন্দু বিরোধী উস্কানি দিয়ে চলেছে। তারাও জানে ভারত পাশে না থাকলে তাদের খাদ্য ভাণ্ডারে প্রবল টান পড়বে। প্রধানত আলু, পেঁয়াজ ও চালের মতো নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের বাজার অনেকটাই সামলে দেয় ভারত। এমন কি শুক্রবার ভারতের একটি জাহাজ চাল নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে। সেই জাহাজে ২৪ হাজার ৬৯০ টন চাল আছে বলে জানা গিয়েছে। ভারতীয় জাহাজটির নাম টানিস ড্রিম। পরিসংখ্যান বলছে, ভারত থেকে ও তিন অত্যাবশ্যকীয় খাদ্য বাংলাদেশ না গেল সেই দেশে খাদ্যের দাম এমন জায়গায় পৌঁছাবে যে সে দেশে গৃহ যুদ্ধ বেঁধে যেতে পারে।
সেই বিষয়টা খুবই ভালো বোঝেন সে দেশের বিশ্লেষকেরা। তাই বাংলাদেশের অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন “তাদের (ভারতের) রাজনৈতিক বক্তব্য যাই হোক, তাদের ব্যবসায়ীদের স্বার্থও দেখতে হবে।” যে কারণে বাণিজ্যিক সম্পর্কে প্রভাব পড়বে না বলে মনে করেন মি. আহমেদ।
ভারত থেকে সর্বশেষ অর্থবছরে বাংলাদেশের আমদানির পরিমাণ প্রায় সাড়ে ১১ বিলিয়ন ডলার, তথ্য ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের। বাংলাদেশে রপ্তানিকারকদের তালিকায় চীনের পরেই ভারতের অবস্থান।
উল্লেখিত তিন পণ্য – আলু, পেঁয়াজ ও চালের ক্ষেত্রে ভারতের ওপর অনেকটাই নির্ভরশীল বাংলাদেশ।
আলু – ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দেশটি থেকে ১৭ লাখ মার্কিন ডলারের আলু আমদানি হয় বাংলাদেশে।আলুর উৎপাদন আগের থেকেই হিসাব করতে পারে না বাংলাদেশ। ফলে ভারত থেকে আলু না গেল তা যদি অন্য দেশ থেকেই আমদানি করতে হয়, তাহলেব খরচ যা পড়বে তারে আলুর দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যাবে।
পেঁয়াজ – ২০২৩-‘২৪ সালে ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পেঁয়াজ-রসুন জাতীয় পণ্যের রপ্তানির হিসাবে দেখা যাচ্ছে, প্রতিবেশী বাংলাদেশে প্রায় ২০ কোটি ডলারের পণ্য পাঠিয়েছে তারা। বাংলাদেশ পেঁয়াজ উৎপাদন অনেকটা সনির্ভর হলেও আগের থেকেই অনুমান করতে না পাড়ায় তারা ভারত থেকে পেঁয়াজ রসুন আমদানি করতে বাধ্য।
চাল – চালের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেকটা স্বয়ংসম্পূর্ণ বলে সরকারি সূত্রে জানানো হয়। কিন্তু বাস্তবে তা নয়। জাতিসংঘের বাণিজ্য বিষয়ক ডেটাবেইজ অনুযায়ী, ২০২৩ সালে বাংলাদেশে আট কোটি ডলারের বেশি চাল রপ্তানি করেছে ভারত। পরিমাণের দিক থেকে ২ লাখ ১৫ হাজার টন প্রায়। ভারত ছাড়াও ভিয়েতনাম এবং থাইল্যান্ড থেকে চাল আনে বাংলাদেশ। কিন্তু তাতে ওই দেশে চালের দাম অনেকটাই বেড়ে যায়। চলতি বছর বোরোর ভালো ফলন এবং আউশ-আমনের পরবর্তী মৌসুমের কথা বিবেচনায় নিয়ে সংস্থাটি বলছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৫০ হাজার মেট্রিক টন চাল আমদানি করতে পারে দেশটি। তার অধিকাংশটাই যাবে ভারত থেকে।
তাই লোক ক্ষেপানোর জন্য ভারতের শাড়ি পোড়াতে পারেন, কিন্তু কোনোভাবেই ভারতের আলু, পেঁয়াজ ও চাল পুড়িয়ে বিপ্লব দেখাতে পারবেন না। তাই ভারত বিরোধীরা নয়, আসুন ভারতের সঙ্গে আগের মতো বন্ধুত্বের সম্পর্ক বজায় রেখে দেশকে এগিয়ে নিয়ে চলুন।।