কালী পুজোর আগের দিন, ভূত চতুর্দশীতে বাঙালির বাড়িবাড়িতে দেখা যায় এক অদ্ভুত দৃশ্য। বাড়ির বিভিন্ন কোণে জ্বলজ্বল করছে ১৪টি প্রদীপ। কিন্তু কেন এই ১৪টি প্রদীপ? এর পেছনে রয়েছে একাধিক পুরাণ ও লোকবিশ্বাস।
পূর্বপুরুষদের শ্রদ্ধা: অনেকে মনে করেন, এই ১৪টি প্রদীপ জ্বালানো হয় পূর্বপুরুষদের শ্রদ্ধা জানাতে। অন্ধকার রাতে পূর্বপুরুষরা যাতে বাড়ি খুঁজে পান এবং আশীর্বাদ করতে আসেন, সেই বিশ্বাস থেকেই এই রীতির উৎপত্তি।
অশুভ শক্তি দূরীকরণ: আরেকটি ধারণা অনুযায়ী, ভূত চতুর্দশীতে অশুভ শক্তির প্রকোপ বৃদ্ধি পায়। এই অশুভ শক্তিকে দূরে রাখতেই বাড়িতে ১৪টি প্রদীপ জ্বালানো হয়। প্রদীপের আলো অশুভ শক্তিকে দূরে রাখে বলে বিশ্বাস করা হয়।
যমরাজের শান্তি: কেউ কেউ মনে করেন, এই ১৪টি প্রদীপ জ্বালানো হয় যমরাজকে শান্ত করতে। যমরাজের ক্রোধ শান্ত হলে অকাল মৃত্যুর ভয় থাকে না।
পদ্মপুরাণের উল্লেখ: পদ্মপুরাণ অনুযায়ী, ভূত চতুর্দশীতে গঙ্গা স্নান করলে নরক যন্ত্রণা কম সহ্য করতে হয়। এই দিনে প্রদীপ জ্বালানোও এই বিশ্বাসের সাথে যুক্ত।
১৪-এর প্রতীকী অর্থ: কিছু পণ্ডিত মনে করেন, ১৪ সংখ্যাটির নিজস্ব একটা প্রতীকী অর্থ রয়েছে। ১৪টি প্রদীপ জ্বালানোর মাধ্যমে এই প্রতীকী অর্থকেই প্রকাশ করা হয়।
এক নজরে:
- কেন: পূর্বপুরুষদের শ্রদ্ধা, অশুভ শক্তি দূরীকরণ, যমরাজকে শান্ত করা, পদ্মপুরাণের উল্লেখ, ১৪ সংখ্যার প্রতীকী অর্থ।
- কখন: কালী পুজোর আগের দিন, ভূত চতুর্দশীতে।
- কোথায়: বাড়ির বিভিন্ন কোণে।
যাইহোক, এই রীতির পেছনে সঠিক কারণ কী, তা নিয়ে বিভিন্ন মতবাদ রয়েছে। কিন্তু বাঙালির কাছে এই রীতিটি হাজার বছর ধরে চলে আসছে এবং এটি তাদের ধর্মীয় বিশ্বাসের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ।