ত্বকের যত্নে
(১) ত্বকে মেছতা হলে সেটা থেকে রক্ষা পেতে নিয়মিত তরমুজ খাওয়ার অভ্যাস করুন। বিশেষজ্ঞরা বলেন, তরমুজে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন ‘এ’ যা শরীরের ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। আর তাই গরমে রেগুলার তরমুজ খাওয়া হলে আপনার ত্বক হবে আরো উজ্জল ও হারানো লাবণ্য ফিরে আসার সম্ভাবনা অনেক।
(২) তাছাড়া তরমুজ ত্বকের রোদে-পোড়া ও কালচে দাগ দূর করতে সাহায্য করে। কয়েকটি হ্যাক ফলো করলে এটা সম্ভব
– তরমুজের রসকে বরফ করে সেটা স্কিনে আলতো করে ঘষতে পারেন।
– তরমুজের রসে কটন প্যাড ভিজিয়ে ত্বকের রোদে পোড়া জায়গায় দিয়ে ১০ মিঃ রাখুন। শুকিয়ে গেলে উঠিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। রেগুলার এটা করতে পারেন।
– এছাড়া পাতলা টাওয়েল বা রুমাল তরমুজের রসে ভিজিয়ে মুখের উপর দিয়ে ১৫ মিঃ রেখে তারপর মুখ ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
– তরমুজের রসের সাথে শসার রস মিশিয়ে রোদে-পোড়া ত্বকে লাগিয়ে ১৫ মিঃ রেখে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
(৩) সেনসিটিভ স্কিনের এক্সফলিয়েশনের জন্যেও তরমুজ ব্যবহৃত হয় কিন্তু! এর পিউরিতে নরম ফাইবার থাকে যা ডেড স্কিন দূর করে স্কিন পরিষ্কার করে এবং কালচে ভাব কমিয়ে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়। তবে জেনে নিন দুটো প্যাক-এর কথা:
– তরমুজের পিউরি-এর সাথে সামান্য মধু মিশিয়ে মিক্সচারটি স্মুদলি স্কিনে রাব করে ১৫ মিঃ রেখে তারপর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
– তরমুজের পিউরি নিয়ে তাতে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস ও সামান্য চিনি মিশিয়ে মিশ্রণটিকে স্কিনে আলতো করে রাব করে ১৫ মিঃ রেখে তারপর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ভালো করে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
স্বাস্থ্য রক্ষায়
(১) বিজ্ঞানীদের জরিপ অনুযায়ী , তরমুজে রয়েছে একটি বিশেষ উপাদান যা হার্টের কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। এছাড়াও, তরমুজে ভিটামিন এ এর পাশাপাশি ভিটামিন সি, পটাসিয়াম ও কেরোটিন আমাদের দেহের কোলেস্টেরল কমিয়ে তুলতে সাহায্য করে । যার কারণে আমাদের হৃদপিন্ড সবসময় যে কোন রকমের বিপদ আপদ থেকে সুরক্ষিত থাকে।
(২) তরমুজে আছে অধিক পরিমাণে ভিটামিন এ এবং বিটা ক্যারোটিন যা আমাদের চোখের রেটিনার সুরক্ষিত রাখতে অধিক কার্যকর এবং এই উপাদানগুলো চোখের ছানি পড়তে বাধা সৃষ্টি করে। তরমুজের ভিটামিন এ আমাদের চোখের জ্যোতি বাড়ায়।
(৩) তরমুজে আছে অধিক পরিমানে পানীয় উপাদান যেগুলো কিডনির উপর চাপ কমিয়ে প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া কমায়। তরমুজ কিডনি ও লিভার সুস্থ রাখতে অনেক উপকারী । যারা পানি কম খান তাদের কিডনিতে পাথর হওয়ার প্রবণতা থাকে। আবার যাদের পাথর হয়ে যায় তারা এর ব্যাথায় অনেক কষ্ট পান। তারা যদি খাদ্য তালিকায় তরমুজ রাখেন তাহলে ব্যাথা থেকে কিছুটা উপকার পাবেন। তবে শুধু তরমুজ না খেয়ে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
(৪) তরমুজে আছে লাইকোপিন নামে এক ধরনের লাল উপাদান যাতে আছে অধিক পরিমাণে ক্যালসিয়াম। আর আমরা সবাই জানি ক্যালসিয়াম হাড়কে মজবুত ও সুস্থ রাখে। মানুষের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাড় দিন দিন দুর্বল হতে থাকে আর তাই তরমুজ নিয়মিত খেলে তা হাড়ের গঠন সুস্থ ও মজবুত করতে খুবই সহায়ক।
(৫) তরমুজে থাকা প্রচুর ক্যালসিয়াম ও পটাসিয়াম আমাদের দেহের ব্লাড প্রেশার নরমাল রাখে। তাই খাদ্যতালিকায় নিয়মিত তরমুজ রাখা উচিত যারা রক্তচাপের সমস্যায় ভোগেন।
(৬) অনেক মানুষ বাত বা মাংসপেশির ব্যথায় ভোগেন অথবা ব্যায়ামের পর শরীরের ব্যথায় কষ্ট পান। এর থেকে বাঁচতে চাইলে প্রতিবার ব্যায়ামের পর অথবা ব্যায়াম করার কমপক্ষে আধা ঘন্টা বা এক ঘন্টা আগে তরমুজ খেলে এই ব্যথা থেকে অনেকাংশে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
(৭) যাদের অনেক শ্বাস কষ্ট বা হাপানীর সমস্যা আছে তারা খাদ্যতালিকায় নিয়মিত তরমুজ রেখে হাপানী প্রতিকার করতে পারেন।