রোশন পরিবারে একের পর এক মারণরোগের ছোবল। ২০১৯ সালে অভিনেতা-পরিচালক রাকেশ রোশনের গলার ক্যানসার ধরা পড়ে। দীর্ঘ যুদ্ধের পর আজ যদিও তিনি একেবারে সুস্থ। কিন্তু তার আগে সেই একই রোগ দানা বেঁধেছিল তাঁর মেয়ের শরীরে। বাইরের দুনিয়া থেকে এ কথা গোপন রেখেছিল রোশন পরিবার। কিন্তু সম্প্রতি ‘দ্য রোশনস’ তথ্যচিত্রে প্রবীণ অভিনেতা পেশাগত এবং ব্যক্তিগত সংগ্রামের কথা বলতে গিয়ে জীবনের কঠিন সময়ের কথা প্রকাশ করেন।
হৃতিক রোশনের দিদি সুনয়না রোশন কেবল জরায়ুর ক্যানসারেই নয়, ভুগছিলেন ফ্যাটি লিভার এবং মস্তিষ্কের টিউবারকিউলোসিসেও। মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ার সময়েও হাল ছাড়েননি সুনয়না। সামনে একগুচ্ছ প্রতিকূলতা। তাও হতাশ হতে দেননি নিজেকে। আর মেয়ের এই মনের জোরই অবাক করেছে রাকেশকে। মেয়ের কাছ থেকেই তিনি শিখেছেন কীভাবে প্রতিকূলতার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে মোকাবিলা করতে হয়।
রাকেশের কথায়, “ছোট থেকেই সে অনেক অসুস্থতা এবং অস্ত্রোপচারের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে। কিন্তু কখনওই সাহসের খামতি ছিল না তার। শত কষ্টেও সকলের মুখে হাসি ফুটিয়ে তুলতে পারত। আমার মেয়ে বসময়ই খুশি থাকতে জানত। এবং এটিই আমাকে অনেক কিছু শিখিয়েছে। আমি বিশ্বাস করি যে পরিস্থিতি যা-ই হোক না কেন, আমাদের আনন্দে এবং সন্তুষ্ট থাকা উচিত।”
২০০০ সালে ‘কহো না প্যায়ার হ্যায়’ মুক্তির পর রাকেশ রোশনের উপর গুলি চালানো হয়। সেই সময়েও মেয়ের কথা মাথায় রেখে সাহস অর্জন করেছিলেন তিনি। সুনয়নার জীবনের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গিই তাঁকে ক্যানসার এবং শুটিংয়ের পর্ব, দুই-ই মোকাবিলা করতে সাহায্য করেছিল।
রাকেশ বলেন, “গুলিবিদ্ধ হওয়ার পরেও আমি এই ঘটনাটিকে খুব হালকাভাবে নিয়েছিলাম। তখনও আমি আমার সন্তানদের সঙ্গে হাসি-ঠাট্টা করছিলাম, যাতে তারা মনে না করে যে জীবন অন্ধকারের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। নিজের ক্যানসার হওয়ার সময় এই ভাবেই জীবনকে দেখেছিলাম। মনে আছে, যেদিন আমার অপারেশন ছিল, তার আগে সকালে হৃতিকের সঙ্গে আমি ব্যায়ামও করেছিলাম।”
রাকেশ তাঁর স্ত্রী পিঙ্কি রোশনকেও ধন্যবাদ জানিয়েছেন, যিনি এত বছর ধরে তাঁর পাশে ছিলেন এবং উচ্চবিত্ত পরিবারে বড় হওয়া সত্ত্বেও তাঁর সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার জন্য রাকেশ বিশেষ ভাবে স্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞ। বিশেষ করে যখন রাকেশ পেশাগতভাবে কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন পিঙ্কি তাঁর হাত ছাড়েননি।