শুক্রবার থেকে ফ্লোরে ফ্লোরে অচলায়তন। শুটিং বন্ধ টলিপাড়ায়৷ আর তার জন্য ফেডারেশনের সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাস দায়ী করলেন পরিচালক গিল্ডকে। অভিযোগ জানানোর পরেও ফেডারেশনের পক্ষ থেকে কোনও বার্তা না পেয়ে বয়কটের ডাক দিয়েছেন পরিচালকেরা।
সম্প্রতি তিন পরিচালক কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, জয়দীপ মুখোপাধ্যায় এবং শ্রীজিৎ রায়কে অসঙ্গতির কারণ দেখিয়ে ‘নিষিদ্ধ’ ঘোষণা করেছিল ফেডারেশন। আর তাতেই আবার মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে ফেডারেশন-পরিচালক গিল্ডের বিবাদ। শুক্রবার সকাল থেকে একাধিক শুটিং ফ্লোরে গিয়ে গিয়ে অচলায়তন পরিস্থিতি দেখে এসেছেন সভাপতি। তার পরেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তীব্র আক্রমণ স্বরূপের।
সভাপতির কথায়, “পশ্চিমবঙ্গের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর একটি বার্তাতেই গতবারের সমস্যার সমাধান হয়েছিল। আমরা তাঁর নির্দেশকে মাথায় রেখেই রাহুলবাবুর (পরিচালক রাহুল মুখোপাধ্যায়) সঙ্গে কাজ করতে অনুমতি দিয়েছিলাম। সেই পরিচালকেরা মুখ্যমন্ত্রী কতটা সম্মান দেন, তা তাঁদের সোশ্যাল মিডিয়া পেজ দেখলেই বুঝতে পারছি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, টলিউডের চেয়ারম্যান অরূপ বিশ্বাস, ইন্দ্রনীল সেনের থেকে যে পরিমাণ সহযোগিতা পাই, মেডিক্লেম থেকে শুরু করে সব কিছু, ফেডারেশনের কিন্তু সেই কৃতজ্ঞতা বোধ আছে।”
পরিচালকের দিকে সভাপতির আক্রমণ, “আমাদের শেখাতে আসবেন না সম্মান কীভাবে দিতে হয় বা না হয়। আপনারা নিজেরা আগে নিজেদের ধর্ম পালন করুন, তারপর আমাদের শেখাবেন। শুটিংয়ে যে মানুষটা উপরে উঠে লাইট লাগায়, যেই লোকটা আপনার সামনে চা নিয়ে যায়, জল এগিয়ে দেয়, তারও কিন্তু একটা সম্মান আছে। তাকে যদি আপনি ‘ধুর-ছাই’ করেন, গালাগালি দেন, আগামী দিনে সেও আপনাকে সম্মান করবে না।”
শুক্রবার সন্ধ্যার বৈঠকে ফেডারেশন উপস্থিত থাকবে কিনা জিজ্ঞাসা করায় সভাপতি প্রশ্ন, “কাজ বন্ধ করার পর আর কিসের আলোচনা?” তাও যদি সরকারের পক্ষ থেকে তাঁদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়, তাঁরা থাকবেন বলে জানালেন।
স্বরূপের সতর্কবাণী, “ইচ্ছাকৃত ভাবে কোনও কোনও ফ্লোরে কাজ বন্ধ করা হয়েছে৷ কোনও জায়গায় লাইনার পাঠানো হচ্ছে না৷ আমি জানিয়ে দিতে চাই, ফেডারেশন কিন্তু এটা সহজ ভাবে নেবে না। কঠোর থেকে কঠোরতম সিদ্ধান্ত নেবে।”
স্বরূপ বললেন, “পরিচালকেরা তো চেক পেয়ে যাবেন। কিন্তু আমাদের টেকনিশিয়ানদের দিনের মজুরি কে দেবে? সম্পূর্ণ পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র এটা। আমরা যদি এভাবে কাজ বন্ধ করে দিতাম, তাহলে কোথাও একটা কাজও হত না৷ কিন্তু সেটা আমরা করিনি। আমাদের সঙ্গে চ্যানেল এবং প্রযোজকদের কথা হয়েছে, তাঁরা বলছেন, শুটিং বন্ধ করে দিতে চান তাঁরা। তারপরও শুটিং কেন বন্ধ হল, জবাব দিতে হবে।”
যদিও কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে বসে আলোচনা হয়েছে বলে জানালেন সভাপতি। কিন্তু বাকি দু’জনের প্রতি বিক্ষুব্ধ স্বরূপ। তাঁর বক্তব্য, তাঁদের অভিযোগ জানানোর ভাষা সঠিক ছিল না। তাই আলোচনা হওয়া দরকার।