জানুয়ারি মাসটা হৃতিক রোশনের জীবনে খানিকটা অন্যরকম। ২৫ বছর আগে এই জানুয়ারিতেই মুক্তি পেয়েছিল তাঁর প্রথম ছবি ‘কহো না প্যায়ার হ্যায়’। আবার জানুয়ারির ১০ তারিখেই জন্মদিন তাঁর। কাটিয়ে ফেলেছেন ৫০টা বছর। কিশোর হৃদয়ে আজও হিল্লোল তোলেন তিনি। বলিউডের এই গ্রীক গডের শরীরে যে বইছে বাঙালি রক্ত।
সালটা ১৯৭৪, আরবসাগরের তীরে মায়ানগরী মুম্বইয়ে জন্ম নেন হৃতিক। ছোট থেকেই বাড়িতে ছিল সাংস্কৃতিক বাতাবরণ। বাবা রাকেশ রোশন নিজেও যুক্ত ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে। হৃতিকের ছোটবেলা কেটেছে মাছে-ভাতে। বাংলার সঙ্গে রয়েছ্য ঐক নিবিড় যোগ।
মাত্র কুড়ি বছর বয়সে কলকাতা ছেড়ে যিনি পাড়ি দিয়েছিলেন অল ইন্ডিয়া রেডিওতে। ভালবাসতেন গান। সেই গানকে সম্বল করেই কলকাতা ছেড়ে ইরা মৈত্র চলে আসেন প্রায় দেড় হাজার কিলোমিটার দূরে। সালটা ১৯৪৮। প্রেমে পড়েন ইরা। প্রেমে পড়েন মিউজিক ডিরেক্টর রোশন লাল নাগরথের। রোশনের এটি ছিল দ্বিতীয় বিয়ে। সুখের সংসার পাতেন তাঁরা। বিয়ের কিছু বছরের মধ্যেই বাবা-মা হন। তবে আচমকাই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হন রোশন লাল। তবে দুই ছেলে রাকেশ ও রাজেশ স্বপ্ন দেখা থামাননি। চলে আসেন মুম্বই। শুরু হয় লড়াই।
এতক্ষণে নিশ্চয়ই বুঝতে পারা গিয়েছে ইরার সঙ্গে হৃতিকের কী সম্পর্ক? হ্যাঁ ঠিকই ধরেছেন। হৃতিকের ঠাকুমা হলেন ইরা। ছোটবেলা থেকেই ঠাকুমার চোখের মণি ছিলেন বলিউডের এই হ্যান্ডসাম হাঙ্ক। তাঁর নাম ‘ডুগগু’– ইরাই দিয়েছিলেন। রাকেশ রোশনের ডাক নাম ছিল গুড্ডু। ইরা নাকি চেয়েছিলেন ছেলের নামের সঙ্গে মিলিয়ে নাতির নাম রাখতে। আর সে কারণেই গুড্ডুর ছেলে হয়ে যান ডুগগু।
শোনা যায়, রোশন পরিবারে ইরার কথাই ছিল শেষ কথা। ভালবাসতেন রান্না করতে। ঠাকুমার হাতের তৈরি মাছ ছিল হৃতিকের বড় প্রিয়। ইরার ছিল আদরের নাতি যে কলকাতা থেকেই তাঁর কেরিয়ার শুরু করেন। কাকতালীয় ভাবে হয়েছিল তাই-ই। ফিল্মি কেরিয়ার ‘কহো না প্যায়ার হ্যায়’ দিয়ে হলেও হৃতিকের প্রথম স্টেঝ পারফরম্যান্স ছিল কলকাতাতেই। ডুগগু ইরাকে ডাকতেন ‘ঠামি’ বলে। তবে হায়, বাংলাটা শেখা হয়নি ঠামির থেকে। রাকেশ রোশন বাংলা জানলেও হৃতিক কিন্তু অপারগ। তবে আজও কলকাতা এলেই আজও ঠামির কথা মবনে পড়ে তাঁর। মনে পড়ে মাছ-ভাত আর আদর। ২০০৫ সালের এই জানুয়ারিই কেড়ে নেয় ইরাকে। হৃতিকও হারিয়ে ফেলেন তাঁর ছোটবেলার আশ্রয়।