মর্মান্তিক মঙ্গলবার। মঙ্গলবারে হয়ে গেলো ভয়ঙ্কর অমঙ্গল। মঙ্গলবার সকালে তিব্বত সহ ৫ টা দেশ কেঁপে উঠেছিল। প্রাথমিক ধাক্কা সামলে যখন খবর আসা শুরু করে তখন বোঝা যায় তিব্বত ও চিনে ঘটে গেছে মর্মান্তিক ঘটনা। শেষ পাওয়া খবর জানাচ্ছে,তিব্বতে ভয়াবহ ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ১০০ পেরলো। আহতের সংখ্যা শতাধিক। কয়েকশো ঘরবাড়ি ভেঙেচুরে নিশ্চিহ্ন হয়েছে। ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়ে আছেন এখনও বহু মানুষ। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন আরও বেশি। মৃত ও জখমদের খুঁজতে ও উদ্ধারে চিনা সেনাবাহিনী দুর্গত এলাকায় ড্রোন ও বিমানবাহিনীকে নামিয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরেই পিপলস লিবারেশন আর্মির (PLA) ওয়েস্টার্ন থিয়েটার কমান্ড জানিয়েছে, উদ্ধারকাজে সহায়তার জন্য সেনাবাহিনী অনুসন্ধানী ড্রোন পাঠানো হয়েছে। হিমালয় পার্বত্য এলাকায় এ ধরনের ভূমিকম্প খুবই স্বাভাবিক। যার ভূবৈজ্ঞানিক কারণ হচ্ছে ভারতীয় ও ইউরেশিয়ান টেকনোটিক প্লেটের সংঘর্ষ বা ঘর্ষণ। এর মধ্যে নেপাল হল বিশ্বের সবচেয়ে ভূমিকম্প প্রবণ এলাকার শীর্ষে। প্রতিবছর ভারতীয় টেকনোটিক প্লেট ইউরেশিয়ান প্লেটকে গড়ে ৫ সেমি করে ঠেলা মারে উত্তর মুখে। ফলে নেপালে ভুকম্প খুবই স্বশভাবিক ব্যাপার।
নেপালের ভূবিজ্ঞানই হল নতুন, অস্থায়ী পাথুরে জমির। সেখানে বিভিন্ন শহরগুলিতে অধিক জনসংখ্যার চাপ এবং কাঠমান্ডুর মতো পর্যটনকেন্দ্রগুলিতে অবৈজ্ঞানিকভাবে গড়ে তোলা হোটেল-জনবসতির মাশুল গুনতে হচ্ছে হিমালয় পাদদেশের অঞ্চলকে। সহজ কথায় বলতে গেলে, সমুদ্রমন্থনের সময় যেমন সমুদ্রের তলদেশ থেকে এক-এক করে নানান বস্তু উঠেছিল, তেমনই মাটির নীচে অবস্থান করা পরতে পরতে সাজানা বিভিন্ন স্তরের পারস্পরিক ঘর্ষণে ভূমিকম্প হয়েছে। অর্থাৎ বিরাটাকার বাসুকী যদি ভূগর্ভে ঘুমিয়ে থাকার পর হঠাৎ জেগে উঠত, তাহলে যেভাবে উপরিভাগের মাটি কেঁপে উঠত এদিন তাই ঘটেছে। উল্লেখ্য, তিব্বতের এই জায়গাটি তিব্বতি বৌদ্ধদের কাছে অন্যতম ধর্মীয় স্থান ও পর্যটন কেন্দ্র। কারণ এখানেই থাকেন তিব্বতি বৌদ্ধ ধর্মগুরু পাঞ্চেন লামা। জায়গাটি মাউন্ট এভারেস্ট থেকে মাত্র ৮০ কিমি দূরে।