বিনোদন

দীর্ঘদিনের এই দাবি পূরণের পর পরবর্তী অভিনয় থেকে কি নাটকের সমাপ্তি পর্যায় অন্য রকমের হবে?

দু’জনেই অভিনেত্রী। আর তার চেয়েও বড় বিষয়, দু’জনেই নারী। লড়াইটাও একই এবং দীর্ঘদিনের। কথা হচ্ছে কিংবদন্তি মহিলা নাট্যব্যক্তিত্ব বিনোদিনী এবং অভিনেত্রী সুদীপ্তা চক্রবর্তীকে নিয়ে। ৩১টি শো, অভিনয় শেষে একটাই অনুরোধ- স্টার থিয়েটারের নাম বদল হোক। অবশেষে তা বাস্তবায়িত। বহুল চর্চিত স্টার থিয়েটারের নাম বদলে রাখা হচ্ছে নটী বিনোদিনীর নামে। সোমবার মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণার পর বেজায় খুশি ‘বিনোদিনী অপেরা’র নটী সুদীপ্তা চক্রবর্তী। ঊনবিংশ শতকের মহিলা নাট্যব্যক্তিত্ব বিনোদিনী দাসীর চরিত্রকে দীর্ঘ ২ বছর ধরে মঞ্চে নিপুণভাবে ফুটিয়ে চলেছেন সুদীপ্তা। এই খবরে কতটা উচ্ছ্বসিত তিনি? একরাশ উচ্ছ্বাস নিয়ে তিনি বলেন, “যতটা খুশি হওয়া দরকার, আমি তার চেয়েও বেশি খুশি। মুখ্যমন্ত্রীর একার সিদ্ধান্ত হয় তো নাও হতে পারে। কিন্তু কেউ তো এই বিষয়টিকে মাননীয়ার কান পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছেন। এই পুরো ঘটনার নেপথ্যে যে বা যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের সকলের প্রতি আমি এবং আমার গোটা টিম কৃতজ্ঞ। আমরা গত দু’বছর ধরে গলা ফাটাচ্ছি শো-এর শেষে। দর্শকদের কাছে সরাসরি দাবি রাখি, একটা বিনোদিনী থিয়েটার থাকা উচিত। আর এটা অনেকদিন আগেই হওয়া উচিত ছিল। সেটা যখন হয়নি, তাহলে স্টার থিয়েটারের নামই বিনোদিনী রাখা হোক। এই দাবিটা যে অবশেষে রাখা হল, আসলেই তা দারুণ ব্যাপার।” ‘বিনোদিনী অপেরা’র প্রতিটা অভিনয়ে মুগ্ধ দর্শক। মঞ্চে দুরন্ত সুদীপ্তা। ব্যক্তিগতভাবে কতটা আবেগের অভিনেত্রীর কাছে? তিনি বলেন, “আমি আমার প্রতিটা চরিত্রই জীবন্ত করে তোলার চেষ্টা করি। কিন্তু বিনোদিনীর মতো ব্যক্তিত্বরা, যাঁরা আসলেই বেঁচে ছিলেন, তাঁদেরকে ফুটিয়ে তোলা কিছুটা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। যদিও ১৫০ বছর আগে তাঁদের যাঁরা স্বচক্ষে দেখেছেন, বেশিরভাগ মানুষই আর সশরীরে থিয়েটারে এসে অভিনয় দেখার অবস্থায় নেই। কাজেই কিছু ছবি ছাড়া আর রেফারেন্স খোঁজার উপায় নেই।” পাশাপাশি অভিনেত্রীর কথায়, “তিনি একজন অভিনেত্রী ছিলেন। আর আমিও অভিনেত্রী। কোথাও গিয়ে আমাদের লড়াইটা মিলে যায়। যে কারণে ৩১টা শোয়ের পরও আমি কান্নায় ভেঙে পড়ি।” দীর্ঘদিনের এই দাবি পূরণের পর পরবর্তী অভিনয় থেকে কি নাটকের সমাপ্তি পর্যায় অন্য রকমের হবে? অভিনেত্রী হেসে বলেন, “আজকেই আমাদের পরিচালকের সঙ্গে কথা হয়েছে। আগামী ৩ জানুয়ারীও একটা শো আছে। এ বার তো নাটকের শেষটা পাল্টে দিতেই হবে।” যদিও লড়াই যে এখানেই শেষ, এমনটা মনে করেন না তিনি। সুদীপ্তা চক্রবর্তীর দাবি, “এ কথাও আমাদের নাটক শেষে বলি, স্টার থিয়েটারে কিন্তু এখন সিমেমা দেখায়, নাটক আর হয় না। তাই আমার দাবি রইল, স্টার থিয়েটারে নাটক মঞ্চস্থ হওয়া আবার শুরু হোক। তবেই এই নামকরণ সার্বিক সার্থকতা পাবে।”

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Adblock Detected

Please Turn Off Your Ad Blocker.