স্ট্রেস কেন হয়?
বিভিন্নভাবে স্ট্রেস হতে পারে। যেমন- এনভায়রনমেন্টাল বা টেম্পারেচার চেঞ্জ (এক্সটার্নাল ফ্যাক্টর)। ধরুন আপনি অনেকটা সময় ঠান্ডা রুমে ছিলেন। হুট করে যখন গরম পরিবেশে চলে আসলেন তখন শরীরে একটা স্ট্রেস হয়। আবার আর্থিক অবস্থা, লেখাপড়া, পারিবারিক সমস্যা ইত্যাদির কারণে সাইকোলজিক্যাল স্ট্রেস দেখা দেয়।
স্ট্রেস এমন একটি বিষয় যেটার সাথেও আমরা থাকতে পারি না, যেটা ছাড়াও আমাদের থাকা সম্ভব নয়। সময়ের সাথে সাথে আমরা বেশ আধুনিক হয়েছি। নাগরিক অনেক সুযোগ সুবিধাই আমরা এখন ভোগ করছি। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বিদ্যুৎ, পানি সবই চাওয়ামাত্র পেয়ে যাচ্ছি। এত সুবিধা পাওয়ার পরও স্ট্রেস কিন্তু আমাদের ছেড়ে যাচ্ছে না। যেহেতু সবার জীবনেই কমন একটি প্রবলেম তাই কেউ হয়তো এটি বেশি ফেইস করে, কেউ কম। সবার স্ট্রেস সহ্য করার ক্ষমতা একরকম নয়। এটা পুরোপুরি নির্ভর করে জেনেটিক্স, আমাদের বেড়ে ওঠা এবং জীবনে কত কঠিন সময় পার হয়ে আসা হয়েছে তার উপর। এর কারণে যেমন দিন দিন মানসিক স্বাস্থ্য খারাপ হয়ে যায়, তেমনই ত্বকের উপরেও বেশ নেগেটিভ এফেক্ট পড়ে।
স্ট্রেসের কারণে একনে বা অন্যান্য স্কিন প্রবলেম কেন হয়?
স্ট্রেস নানাভাবে আমাদের ত্বকের উপর প্রভাব ফেলে। হতে পারে একনে, স্কিন হয়ে ওঠে এক্সট্রা সেনসিটিভ, দেখা দিতে পারে প্রিম্যাচিউর এজিং সাইনস। স্ট্রেসের কারণে স্কিনে কী কী এফেক্ট পড়ে সেগুলো নিয়ে চলুন আরও কিছু তথ্য জেনে নেয়া যাক-
১) একনে হওয়ার চান্স বেড়ে যায়
আপনি যখন এনভায়রনমেন্টাল স্ট্রেসের মধ্য দিয়ে যান, তখন আপনার বডি কর্টিসল নামে স্ট্রেস হরমোন ক্রিয়েট করে। শরীরের জন্য এই হরমোনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি বেশ কয়েকটি কাজ করে। যেমন- ব্লাডে সুগার বাড়ায়, ব্রেনের মাধ্যমে চিনির ব্যবহার বাড়ায়, ব্রেনকে আরও অ্যাকটিভ করে এবং টিস্যু রিপেয়ারের সংখ্যা বাড়ায়। তবে কর্টিসলের পরিমাণ বেড়ে গেলে অন্য সমস্যা হতে পারে। যেমন- এই হরমোনের বৃদ্ধির কারণে স্কিনে আরও সিবাম প্রোডিউস হয়। আর বেশি সিবাম প্রোডিউস হওয়া মানেই ক্লগ হয়ে যাওয়া এবং একনে ব্রেকআউট হওয়া।
মজার ব্যাপার কি জানেন? একদিকে স্ট্রেসের কারণে একনে বেড়ে যাচ্ছে, আবার একনে কেন হচ্ছে তা নিয়ে আরও স্ট্রেস হচ্ছে। কি অদ্ভুত এক সাইকেল তাই না? যাদের ত্বক এমনিতেই অয়েলি তাদের সিবাম বেশি প্রোডিউস হওয়ার কারণে একনে এমনিতেই বেশি দেখা দেয়। কিন্তু স্ট্রেসের কারণে যদি সব ধরনের ত্বকেই ব্রণ দেখা দেয় তাহলে মেনে নেয়া কিন্তু কিছুটা কঠিন, তাই না?
২) স্কিন এক্সট্রা সেনসিটিভ হয়ে ওঠে
ইমিউনিটি সিস্টেমের উপর স্ট্রেস বেশ প্রভাব ফেলে। সময়ের সাথে সাথে স্ট্রেস স্কিনের ইমিউনিটি কমাতে থাকে। যার কারণে স্কিনে আর্টিকারিয়া নামে এক ধরনের স্কিন প্রবলেম দেখা দেয়। এটি এমন একটি স্কিন ডিজঅর্ডার, যেটির কারণে স্কিন বেশ হয়ে ওঠে। সেই সাথে স্কিনে দেখা দেয় বড় বড় বাম্পস।
৩) প্রিম্যাচিউর এজিং সাইনস দেখা দেয়
আমরা জানি যে, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট এজিং প্রসেস ডিলে করে দেয়। অপরদিকে প্রো-অক্সিডেন্ট এজিং প্রসেস এর স্পীড বাড়িয়ে দেয়। আমরা যখন ক্রনিক স্ট্রেসে ভুগি তখন বডির পাওয়ার হাউজ নামে পরিচিত মাইটোকন্ড্রিয়া বেশি পরিমাণে Reactive Oxygen Species (ROS) প্রোডিউস করতে থাকে। এগুলো আসলে প্রো-অক্সিডেন্ট – যা সেলের টিস্যু ড্যামেজ করে দেয়, এমনকি প্রভাব ফেলে ইন্টারনাল অর্গানের উপরও।