পোরস কী?
পোরস হলো আমাদের শরীরের উপরিভাগে থাকা লোমকূপ, যার মাধ্যমে শরীরের ভিতরের সেবাসিয়াস গ্ল্যান্ড থেকে ক্ষরিত সেবাম বা তেল, ঘাম ইত্যাদি বের হতে পারে। পোরস বা লোমকূপ আমাদের শরীরে সবসময়ই থাকে এবং তার মাধ্যমে আমাদের শারীরবৃত্তীয় কাজকর্ম অব্যাহত থাকে। তার মানে বোঝা যাচ্ছে যে, পোরস হুট করেই শরীরে চলে আসে না বরং সবসময়ই থাকে। তবে বয়স বাড়ার সাথে সাথে এবং কিছু ভুলের কারণে ফেইসের পোরস দৃশ্যমান হয়ে ওঠে।
ফেইসের পোরস বড় হয়ে যায় কেন?
১) অতিরিক্ত ক্লেনজিং
অনেকেই মনে করেন মুখ বেশি ধুলে ত্বক ভালো থাকে। এছাড়াও যাদের ত্বক অয়েলি তারা মুখ একটু তেলতেলে হলেই বার বার দিয়ে ওয়াশ করতে থাকে। ওভার ওয়াশিং ত্বকের জন্য ক্ষতিকর এবং এর ফলে ত্বক সাময়িকভাবে একটু ফ্রেশ লাগলেও মূলত মুখের ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হয়, মুখের পোরস থেকে সেবাম বা তেল আরো বেশি পরিমাণে ক্ষরিত হয়। আর সেবাসিয়াস গ্ল্যান্ড থেকে যত বেশি সেবাম/তেল ক্ষরিত হয়, ততবেশি পোরস এনলার্জড হতে থাকে এবং দৃশ্যমান হয়। তাই দিন রাত মিলিয়ে এক থেকে দুইবারের বেশি মুখ ক্লেনজার দিয়ে ধোয়া ঠিক নয় এবং ধোয়ার পর পর উচিত মুখে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা।
২) এক্সফোলিয়েটর ব্যবহার না করা
এখানে এক্সফোলিয়েটর বলতে মূলত কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েটর ব্যবহারকে বোঝানো হচ্ছে। অনেকেই এক্সফোলিয়েটর ব্যবহার করতে অনাগ্রহী হয়, এর ফলে আমাদের মুখের ত্বকের মরা চামড়া, তেল, সেবাম, ঘাম এগুলো একত্রিত হয়ে মুখের উপর জমা হয় এবং জমতে থাকে লোমকূপগুলোতে। যার ফলে লোমকূপের মুখ বন্ধ হয়ে যায় এবং সেখানে ক্লোজড কমেডোন, , হোয়াইটহেডস এর সৃষ্টি হয়। যা পরে একনের সমস্যা বাড়ায়। তাছাড়াও মুখের লোমকূপগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে সেগুলো সেবাসিয়াস গ্ল্যান্ড এর নিঃসরণের জন্য পোরসগুলো বড় হয়ে উঠে। তাই ত্বকের যত্নে সঠিক এক্সফোলিয়েটর ব্যবহার করা উচিত, এটি বেসিক স্কিন কেয়ারের একটি অংশ।
৩) ব্লটিং পেপার ব্যবহার করা
অনেকেই মুখের ঘাম ও তেল শুষে ফেলতে ব্লটিং পেপার ব্যবহার করে, বিশেষত তৈলাক্ত ত্বকের অধিকারীরা। কিন্তু এই ব্লটিং পেপার ব্যবহার মুখের পোরস বা লোমকূপকে এনলার্জড করে ফেলতে পারে। কারণ ব্লটিং পেপারগুলো এমনিতেও মুখের জন্য বেশ রাফ বা হার্শ হয়। এছাড়াও যতবার ব্লটিং পেপার দিয়ে এই মুখের তেল বা ঘাম একদম লোমকূপের ভেতর থেকে শুষে নেওয়া হয় ততবেশি সেবাসিয়াস গ্ল্যান্ড সেবাম ক্ষরণ করে। যার ফলে মুখে আরো বেশি পরিমাণে উৎপন্ন হতে থাকে এবং পোরস দৃশ্যমান হয়ে ওঠে। তাই আপনি যদি ব্লটিং পেপার ব্যবহার করে থাকেন তবে তা আজ থেকেই বন্ধ করে দিন।
৪) হার্শ ক্লেনজার বা স্ক্রাব ব্যবহার করা
মুখের ত্বকের জন্য বেশি ক্ষারযুক্ত বা হার্শ ক্লেনজার অথবা স্ক্রাবের ব্যবহার মুখের ত্বকের উপরিভাগকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং স্কিনকে ওভারড্রাই করে ফেলে। এছাড়াও এসব ক্লেনজার বা সোপের পিএইচ মুখের ত্বকের সাথে মানানসই থাকে না। যার ফলে ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং এই ক্ষত সারাতে আমাদের সেবাসিয়াস গ্ল্যান্ড বেশি তেল উৎপন্ন করে, এতে পোরস বড় হয় এবং দৃশ্যমান হয়ে ওঠে। তাই অবশ্যই মুখের জন্য মানানসই ক্লেনজার ব্যবহার করতে হবে। এছাড়াও রাফ বা বড় দানার স্ক্রাব ব্যবহার করলে তা মুখের ত্বকে উপর স্ক্র্যাচ সৃষ্টি করে এবং ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত করে। সেই ত্বকে ঘর্ষণের ফলে পোরস বড় হয়ে ওঠে।