পশ্চিমবঙ্গ

সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিতে না পেরে টোটোর ভিড়ে আজ আরও ব্রাত্য রিক্সা

বেশ কয়েকবছর আগে রাস্তায় দেখা যেত সারিবদ্ধ হয়ে কয়েকশো রিকসা দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু আজ সেই রিক্সার সারি দেখা যায় না। সবটাই হাতে গোনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর যে কয়েকটা রিক্সা রয়েছে তাঁর চালকদের সংসার চালানো ভীষণ কষ্টকর হয়ে পড়েছে। এসব কিছুর পিছনে রয়েছে আধুনিক যান টোটো।

 

 

 

বাজারে আসার পর থেকে হুহু করে প্রচুর টোটো বিক্রি হয়েছে। অধিক মুনাফা লাভের আশায় অধিকাংশ চালকরা তাঁদের রিক্সা বিক্রি করে টোটো কিনেছে। আর তাতে বাধ সেধেছে রিকসা চালকদের রুজি রোজগারে। উপযুক্ত রোজগার না হওয়ায় তাঁদের দিন আনা দিন খাওয়া সংসারের লক্ষীর ভাঁড়ে টান পড়েছে।

 

 

 

প্রতিদিন সকাল হতেই রাস্তায় বেড়িয়ে পড়েন চালকরা ভাড়ার আশায়৷ তারপর ভাগ্যক্রমে কোনও ভাড়া জুটলে কিছু কামাই হয়। কপাল ভালো যায় সেদিন, যেদিন গলদঘর্ম হয়ে ছায়াতে বসে বিড়িতে সুখের টান দিয়ে ঠান্ডা মিঠেল হাওয়ায় একটু জিরিয়ে নেন ওঁরা।

 

 

 

তারপর সংসারের সমস্যা নিয়ে নানা চিন্তা রোমন্থন করতে থাকে। ভাবে যদি আমারও বেশ কিছু টাকা থাকলে টোটো কিনে সংসারের অভাব অনটন মেটাতাম। কিন্তু হায় ভাগ্যের পরিহাস। এক রিক্সা চালক রতন সরকার বলেন, “কী আর করব টোটো হয়ে যাওয়াতে আমাদের ব্যাবসা কমেছে ঠিকই তেমনি ভাড়া পেলে আনন্দের সীমা থাকে না। মাঝে মাঝে ভাবি ঋণ নিয়ে আমিও টোটো কিনবো কিন্তু ভয় পাই যদি ঋণ শোধ করতে না পারি। এই আছি বেশ আছি যতদিন চলে চলুক না।”

 

 

 

টোটো নিয়ে বিশ্বপ্রীয় সাহা নামে এক সমাজসেবী ও লেখক বলেন, ”যদি বিচার করে দেখা যায় টোটোতে পরিবেশ দূষন হয় না এবং অনেক যাত্রী একসঙ্গে নেওয়া যায়। সঙ্গে শারীরিক পরিশ্রমও হয় না। আবার মানবিকতার বিচার করলে সত্যি রিকসা চালকরা আজ ব্রাত্য হয়েছে। যখন তারা ভাড়া পায় না তখন তাদের করুণ মুখগুলি মনকে ভীষন নাড়া দেয়। আমার মতে সরকার যদি এদের জন্য কোনও বিকল্প ব্যবস্থা করে তা হলে হয়তো এরা বেঁচে যাবে।” তবে বলাই বাহুল্য আধুনিক সময়ে টোটোর ভিড়ে রিক্সা ব্রাত্য হয়েছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Adblock Detected

Please Turn Off Your Ad Blocker.