চুলে যত্নে কী কী ব্যবহার করবেন? এমন প্রশ্নের উত্তর সবাই জানে। কারণ বাজারে চুলের যত্নে প্রসাধনীর অভাব নেই। তবে বাজারে প্রচলিত প্রসাধনী ছাড়াও ব্যবহার করতে পারেন ঘরোয়া জিনিস। খুব সহজেই হবে চুলের যত্ন। এটি রয়েছে আপনার হাতের নাগালেই। বলছি খুব পরিচিত ভাতের মাড়ের কথা। ভাতের মাড় দিয়ে চুল ধুলে পাবেন অনেক উপকার। চুলের যত্ন নিবে কোনো ধরনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ছাড়াই।
ভাতের মাড়
বাঙালিদের সবার ঘরেই ভাত রান্না হয়। ভাত রান্না শেষে ভাতের মাড় আমরা ঝরিয়ে ফেলি। সেই মাড় না ফেলে কাজে লাগাতে পারেন। চাল ধুয়ে রান্নায় বসানোর সময় বেশি করে পানি দিয়ে দিন। চাল ফুটে গেলে মাড় ঝরিয়ে নিন। সেই মাড় চুলে ব্যবহার করুন। চুলের যত্নে দুইভাবে ব্যবহার করতে পারেন এটি।
১. স্প্রে বোতলে ভরে ব্যবহার করতে পারেন। অথবা
২. সরাসরি চুলে ঢালুন। এরপর একটি চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়িয়ে নিলেই হবে।
এটি ব্যবহারে চুল লম্বা ও সুন্দর হয়। এছাড়াও এতে আছে ভিটামিন বি, ভিটামিন ই, ম্যাগনেসিয়াম এবং জিংঙ্ক।
ব্যবহার
চুলে যেকোনো সময় ব্যবহার করেতে পারেন। প্রতিদিন বা সপ্তাহে একদিন ব্যবহার করতে পারেন। তাতেও চুলে কাজে দিবে। শ্যাম্পু করার পাশিাপাশি এটি ব্যবহার করতে হবে। চুলের যত্নে যে রুটিন মেনে চলেন তার মধ্যেই এটি ব্যবহার করতে পারেন। এতে কোন অসুবিধা হবে না।
** প্রথমেই চুল শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে নিন। চাইলে কন্ডিশনার নিতে পারেন। একবার এগুলো দেওয়া হয়ে গেলে মাড় দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। স্প্রে বোতলে ভরেও ব্যবহার করতে পারেন। এরপর আঙ্গুল দিয়ে মাথায় ছড়িয়ে দিন বা ম্যাসাজ করুন তেলের মতো করে। চিরুনিও ব্যবহার করতে পারেন এক্ষেত্রে।
** বিশ মিনিট অপেক্ষা করুন। তারপর হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। পানি দিয়ে ভালো করে পরিষ্কার করতে হবে।
বিজ্ঞান কি বলে?
১. ভাতের মাড়ে থাকা স্টার্চ এবং অ্যামিনো এসিড রুক্ষ শুষ্ক চুল নরম করে। আগা ফেটে যাওয়া চুলেরও যত্ন নেয়।
২. ভাতের মাড়ের কোনো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই। এতে আছে উচ্চ মাত্রার ভিটামিন যা চুল উজ্জ্বল করে। ভাতের মাড়ে থাকা ভিটামিন বি ও ই চুল নরম ও চকচকে করতে সাহায্য করে।
৩. ভাতের মাড়ে থাকা অ্যামিনো এসিড প্রোটিন উৎপাদনে খুব গুরুত্বপূর্ণ। একটি বিশেষ ধরনের অ্যামিনো অ্যাসিড ‘সিস্টাইন’ চুল, নখ এমনকি ত্বক তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। ভাতের মাড়ে ইনোসিটল নামে পরিচিত একটি যৌগ রয়েছে, যা চুল মজবুত এবং চুল পড়া প্রতিরোধে সহায়তা করে। চুল পড়া প্রতিরোধে ব্যবহৃত প্রসাধনীতেও পাওয়া যায় এটি। এছাড়া পাতলা চুলকে মজবুত করে, ক্ষয় রোধ করে এবং চুল সহজে ভেঙে যায় না। তাই ভাতের মাড় চুলের জন্য খুব উপকারি।
৪. মাথার ত্বককে আলতো করে পরিষ্কার করতে সাহায্য করে ভাতের মাড়। চুলে প্রচুর প্রসাধনী ব্যবহারের ফলে জ্বালা পোড়া এবং চুলকানি হতে পারে। ভাতের মাড় এক্ষেত্রে খুব উপকারি। যখন মাথার ত্বকে বেশি পরিমাণে সিবাম বা প্রকৃতিক তেল তৈরি হয় তখন, মাথার ত্বক শুষ্ক বা খুশকি হতে পারে। তখন শ্যাম্পু ব্যবহারের পরে ভাতের মাড় ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যাবে। কারণ এতে আছে প্রাকৃতিকভাবে পাওয়া অনেক ভিটামিন এবং পুষ্টি। যেমন জিঙ্ক জ্বালা পোড়া কমায়, চুলকানি থেকে মাথার ত্বককে রক্ষা করে।