রুপ চর্চার এক অজানা রহস্যের নাম হলুদ। রূপচর্চায় এই উপাদানটির ব্যবহার চিরন্তন।যার কারনে হলুদকে পরীক্ষালব্ধ ভেষজ উপাদান বলা হয়।হলুদের সহস্র গুণাগুণ রয়েছে। হলুদ। ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির সাথে সাথে আরও নানাবিধ উপকার করে থাকে।
তবে হলুদ ত্বকে ব্যবহারের পূর্বে এর নিয়ম সম্পর্কে অবশ্যয় অবগত হতে হবে। নিয়ম মেনে হলুদ ব্যবহার করলে কোনো রকমের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হবে না। হলুদের সঙ্গে কোন কোন উপাদান মিশিয়ে সহজ ও ঘরোয়াভাবে রূপচর্চা করতে পারবেন সে বিষয়ে নিম্নে আলোচনা করা হলো:
১.হলুদের গুণাগুন:
হলুদ ত্বকের অন্যতম প্রধান প্রোটিন কোলোজেন তৈরিতে সহায়তা করে, ত্বকেরে উজ্জ্বলতা বজায় রাখে, এবং ক্ষত নিরাময়ে সহায়তা করে। এতে ভিটামিন ‘সি’ ক্যালসিয়াম ভিটামিন-৬, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়ামের সহ নানাবিধ উপাদান বিদ্যমান। অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াম উপাদান হিসেবে এটি বহুকাল ধরে ব্যবহার হয়ে আসছে। যার ফলে তাড়াতাড়ি ক্ষত শুকিয়ে যায় এবং ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ উভয় প্রকার সমস্যার সমাধান হিসেবে হলুদ ব্যবহার করা যায়। ত্বকের সব ধরনের সমস্যা হলুদের পক্ষে ঠিক করা সম্ভব। যেমন- ব্রণ, কালো দাগ, শুষ্কতা, তৈলাক্ত ভাব, বলিরেখা দূর ইত্যাদিতে হলুদ সক্রিয় ভূমিকা পালর করে।
কোনো কিছু ত্বকে ব্যবহারের আগে এর নিয়মকানুন অবশ্যই জেনে নিতে হবে। সবার ত্বকের গঠণ এক নয়। ত্বকের ধরন আগে জানতে হবে। তাই ত্বকের ধরন অনুযায়ী রূপচর্চা করলে উপকার তো বটে,কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও হবে না।
২. ক্ষত সারাতে হলুদ:
১ চা চামচ মধুর সাথে, ১ চা চামচ হলুদের গুঁড়া মিশিয়ে ১৫ মিনিট ক্ষতের ওপর রেখে শুকিয়ে গেলে ধুয়ে নিন। এতে ত্বকের ক্ষত সেরে যাবে।
৩. অভ্যন্তরীণ সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে হলুদ :
কাঁচা হলুদ ভালো করে ধুয়ে পাতলা করে কেটে রুম টেম্পারেচারে শুকিয়ে ভালোভাবে ব্লেন্ড করে কাচের কনটেইনারে করে ফ্রিজে রেখে দিন। প্রতিদিন গরুর দুধের সঙ্গে হাফ চা চামচ হলুদের গুঁড়া মিশিয়ে খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে।হলুদ ত্বকে ব্যবহারের আগে অবশ্যয় ত্বকের ধরন জেনে নিতে হবে। তাহলে সেই অনুযায়ী হলুদ ত্বকে ব্যবহারের ফলে ত্বকের উপকার পাওয়া যাবে।
৪. ত্বক ভেধে হলুদ ব্যবহারের নিয়ম:
শুষ্ক ত্বকে হলুদ ব্যবহারের নিয়ম :
হলুদের রস বের করে নিয়ে ৫-৭ মিনিট ফুটিয়ে ঠাণ্ডা করে কাচের জারে রেখে দিতে হবে। তারপর পরিমান মত ব্যবহার করতে হবে।
প্যাকাশে ত্বকে হলুদ ব্যাহারের নিয়ম :
১ টেবিল চামচ হলুদের রসে, ২টি কাঠ বাদাম ভিজিয়ে ভালো করে পেস্ট করে নিয়ে এর সঙ্গে হাফ চা চামচ ডিমের কুসুম, ১ টেবিল চামচ ডালের গুঁড়ার বেসন মিশিয়ে নিয়ে পুরো মুখে ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে নিন। এতে উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে, বলিরেখা দূর হবে, ত্বকে টানটান ভাব বজায় থাকবে।
তৈলাক্ত ত্বক হলুদ ব্যবহারের নিয়ম :
১ টেবিল চামচ হলুদের রসের সঙ্গে ১ টেবিল চামচ মুলতানি মাটি কিছুক্ষণ ভিজিয়ে এর সাথে ১ চা চামচ পুদিনা পাতার পেস্ট, ১ চা চামচ তুলসী পাতার পেস্ট ও ১ চিমটি কর্পূর ভালো করে মিশিয়ে মুখে ১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে নিন। এতে ত্বকে জমে থাকা তৈলাক্ততা কমে যাবে ও ব্রণ থাকবে না।
মিশ্র ত্বকে হলুদ ব্যবহারের নিয়ম :
হলুদের রসের সাথে ১ টেবিল চামচ ডিমের সাদা অংশ ও কুসুম, মিলিয়ে। এর সঙ্গে মুগ ডালের বেসন মিশিয়ে ত্বকে ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে নিন।
যে হলুদে কারকিউমিনের পরিমাণ বেশি সেই হলুদের ঔষধি গুণও বেশি থাকে। হলুদ আবার কখনও কখনও শক্তির কারণও হয়ে দাঁড়ায়। যে হলুদে সিসার পরিমাণ বেশি থাকে সে হলুদ ক্ষতিকর। তাই হলুদ ব্যবহারে অবশ্যয় সতর্ক থাকতে হবে।