অফবিট

ব্রাহ্মণদের উপনয়ন – ধৰ্মীয় বিধান

‘উপনয়ন’ যাকে সাধারণভাবে আমরা ‘পৈতে’ বলি – হিন্দু ধর্মে তার গুরুত্ব অপরিসীম। পৈতের মাধ্যমেই তিনি ব্রাহ্মণ হলেন অর্থাৎ ব্রহ্মজ্ঞান লাভ করলেন। এটি প্রকৃতপক্ষে তিনটি পবিত্র সূতো যা দেবী সরস্বতী, গায়ত্রী ও সাবিত্রীর প্রতীক। যজ্ঞোপবীত বা পৈতা সংস্কারকে হিন্দুধর্মের অন্যতম প্রধান ধর্মানুষ্ঠান বলে মনে করা হয়। যজ্ঞোপবীতকে পৈতে বলা হয়। পৈতে হল তিনটি সুতোযুক্ত একটি সুতো যা পুরুষরা তাঁদের বাম কাঁধের উপর থেকে ডান বাহুর নিচ পর্যন্ত পরিধান করেন। পৈতেকে অত্যন্ত পবিত্র বলে মনে করা হয় এবং এর যাবতীয় নিয়ম শাস্ত্রে বলা হয়েছে, যা কঠোরভাবে মেনে চলা আবশ্যক। কারও বাড়িতে শৈশবে পৈতের অনুষ্ঠান হয় আবার কেউ বিয়ের আগে করেন। পৈতে পরিধান করলেই শিশু যজ্ঞ ও স্ব-অধ্যয়নের অধিকার পায়।

পৈতের গুরুত্ব, নিয়ম এবং উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। পৈতে তিনটি উৎসের সমন্বয়ে গঠিত। এটি দেবরুণা, পিতৃরুণা এবং ঋষিরুণার প্রতীক। এর সঙ্গে এটিকে সত্ত্ব, রজ ও তম এর প্রতীকও বলা হয়। যজ্ঞোপবীতের প্রতিটি পংক্তিতে তিনটি করে স্ট্রিং আছে। এভাবে নয়টি সুতো দিয়ে সুতো তৈরি হয়। এই নয়টি সুতোকে শরীরের নয়টি দরজা, একটি মুখ, দুটি নাসিকা, দুটি চোখ, দুটি কান, মল এবং প্রস্রাব বলে মনে করা হয়। এতে স্থাপিত পাঁচটি গিঁটকে ব্রহ্ম, ধর্ম, অর্থ, কাম এবং মোক্ষের প্রতীক বলে মনে করা হয়।

পৈতে পরিধানের পর কিছু নিয়ম মেনে চলা আবশ্যিক। সেগুলো হল-

* মলমূত্র ত্যাগের পূর্বে ডান কানে পৈতে দিতে হবে এবং হাত পরিষ্কার করার পরই কান থেকে বের করে দিতে হবে।

* পৈতের কোনও সুতো ছিঁড়ে গেলে বা ৬ মাসের বেশি হলে তা পরিবর্তন করতে হবে।

* যেকোনও ব্যক্তির তখনই পৈতে পরিধান করা উচিত যখন সে এই নিয়মগুলি সম্পূর্ণরূপে মেনে চলতে সক্ষম হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Adblock Detected

Please Turn Off Your Ad Blocker.