হিন্দু বিবাহিতা নারীর ভূষন শাঁখা- কেন জানেন? হিন্দু নারীদের অলংকার শাখাঁ আর সিদুঁরই তার অহংকার! শাঁখা সিঁদুর হিন্দু ধর্মের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। শাঁখা সিঁদুর আমাদের সনাতন হিন্দু বিবাহিত নারীরা পরে আসছে অনেক আগে থেকে। তবে বর্তমানে এগুলা না পরা অনেকটা তথাকথিত আধুনিকতার স্বরুপ হয়ে দাড়িয়েছে কারো কারো কাছে। কেন শাঁখা আমাদের হিন্দু বিবাহিত নারীরা পরে আসছে। শাঁখা ব্যবহারের প্রথম আধ্যাত্মিক কারণটি হল শাঁখার সাদা রং- সত্ত্ব, সংসারী লোকেরা তিনটি গুণের অধীন হয়ে সংসারধর্ম পালন করে। আর এই তিন গুণকে সাথী করে, আধ্যাত্মিকতায় ত্রিগুণের অতীত হওয়ায়ই প্রয়াস। আধুনিক যুগে শাখা পরার সামাজিক কারণ:- শাখা পরিধান করলে প্রথম দৃষ্টিতেই জানিয়ে দেয়, ঐ রমণী একজন পুরুষের অভিভাবকত্বে আছেন। সেই কারণেই অন্য পরপুরুষের লোভাতুর, লোলুপ ও কামনাময় দৃষ্টি প্রতিহত হয়। অর্থাৎ শাখা একটি নারীর সম্ভ্রম রক্ষার প্রধান কারণও বটে। যদিও সভ্য এবং সুশিক্ষিত পুরুষেরা সর্বদাই নারীর মর্যাদা সকল স্থানে এবং সময়ে নারীর রক্ষা করে থাকেন। স্বামীর মঙ্গল চিহ্ন তো অবশ্যই থাকে এই শাঁখা অলঙ্কারে শাখা পরার বিজ্ঞানমূলক কারণ:-রক্তের একটি উপাদান, শাঁখায় রয়েছে ক্যালসিয়াম। আর্য ঋষিগণ সনাতন ধর্মের প্রতিটি আচার অনুষ্ঠানেই বৈজ্ঞানিক প্রয়োজনীয়তাকে প্রাধান্য দিয়ে আচার বা অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করেছেন। সামুদ্রিক শঙ্খ থেকে তৈরি এবং হিন্দু ধর্মীয় বৈবাহিক রীতির একটি মহত্বপূর্ন অলঙ্কার হচ্ছে শাখা। হাতের বালার মতো এই অলঙ্কার বিবাহিতা হিন্দু মহিলারা ব্যবহার করেন। বিবাহের মন্ত্র পড়ার সময় কনের পিতা কনের হাতে দুটি শাঁখা দিয়ে থাকেন। স্বামীও স্ত্রীর জন্য শাঁখা কিনে আনেন। হিন্দু রমণীরা তাঁদের স্বামীর মঙ্গল কামনায় শাঁখা অতি যত্ন সহকারে ব্যবহার করেন। কাটা বা ভাঙ্গা শাঁখা ব্যবহার করা অমঙ্গল ও শঙ্কাজনক মানসিকতার সৃষ্টি করে। এক কথায় শাঁখা হচ্ছে স্বামীর প্রতি অকৃত্রিম ভালবাসার এক প্রতীক। আধুনিক সমাজে শাখা পরারববাহ্যিক সুবিধা:- -কোনো শাঁখা পরিহিত মহিলাকে দেখলে সবাই বোঝে যে, সে বিবাহিত। সেই ক্ষেত্রে তার সাথে সুশ্রী আচরণ করা হয়। যদিও প্রত্যেক নারীই সুশ্রী আচরণের যোগ্যা। নারীদেরও শাঁখা সিদুঁরের প্রতি আলাদা স্প্রিহা থাকে। কেননা এটি তার জীবনের মিল বন্ধনে প্রতি মুহুর্ত জ্ঞাত করে। স্বামী হিন্দু মেয়েদের কাছে তাদের দেবতা স্বরুপ। তাই স্বামীর দেয়া প্রথম এই শাখাঁই তার অহংকার। একজন নারী তার শাঁখার মাধ্যমে এবং বিবাহের মন্ত্রসহ সকল কাজের সমাপ্তি মাধ্যমেই তার স্বামীর সাথে আপন হতে থাকে। একটু একটু করে সকল আচার বিধি শেষ হওয়ার মাধ্যমে অটুট হতে থাকে তাদের যুগযুগান্তরের, জন্মজন্মান্তরের বন্ধনও। হিন্দু শাস্ত্র অনুযায়ী ব্রহ্মপুরাণে শাঁখা সিঁদুরের উল্লেখ রয়েছে। পুরাণের পাতা থেকে জানা যায়, শঙ্খাসুরের স্ত্রী তুলসী দেবী ভগবান নারায়ণের আরাধনা করতেন। অন্য দিকে শঙ্খাসুর ছিলেন ভগবানবিমুখ। স্বেচ্ছাচারী শঙ্খাসুরের পাপের শাস্তি হিসাবে তাকে বধ করা হয় এবং ভারত মহাসাগরে ভাসিয়ে দেওয়া হয়। পতিব্রতা তুলসী দেবী তা সহ্য করতে না পেরে স্বামী ও নিজের অমরত্বের জন্য ভগবানের কাছে প্রার্থনা শুরু করেন। সন্তুষ্ট হয়ে ভগবান তুলসী দেবীর প্রার্থনা মঞ্জুর করেন, তাঁর দেহ থেকে তুলসী গাছ এবং সমুদ্রে মৃত স্বামীর অস্থি থেকে শঙ্খ বা শাঁখা তৈরি করেন। এর পরে, তুলসী দেবীর ধর্মপরায়ণতা দেখে ভগবান দু’জনকেই ধর্মীয় কাজে নিযুক্ত করে দেন। সেই থেকে পতিব্রতা তুলসীকে চিরস্মরণীয় করে রাখতে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের তুলসী ও শাঁখা ব্যবহারের প্রচলন হয়।
Read Next
অফবিট
January 5, 2025
চোখের যত্নে আই ক্রিম কেন ও কীভাবে ইউজ করবেন?
অফবিট
January 4, 2025
চুলের যত্নে ‘মেথি’
অফবিট
January 4, 2025
চুলের যত্নে হাজার বছরের প্রাচীন ‘রিঠা’ – আয়ুর্বেদের পরামর্শ
অফবিট
January 4, 2025
নখ কামড়ানোর অভ্যাস থাকলে দ্রুত ত্যাগ করুন
January 5, 2025
ডে অ্যান্ড নাইট স্কিনকেয়ার রুটিনে ভিন্ন ভিন্ন ক্রিম কেন ইউজ করবেন?
January 5, 2025
চোখের যত্নে আই ক্রিম কেন ও কীভাবে ইউজ করবেন?
January 5, 2025
ড্রাই অ্যান্ড সেনসিটিভ স্কিন হলে কোন উপাদানগুলো এড়িয়ে চলবেন?
January 4, 2025
চুলের যত্নে ‘মেথি’
January 4, 2025
চুলের যত্নে হাজার বছরের প্রাচীন ‘রিঠা’ – আয়ুর্বেদের পরামর্শ
January 4, 2025
নখ কামড়ানোর অভ্যাস থাকলে দ্রুত ত্যাগ করুন
Related Articles
Check Also
Close
-
ক্রমশ কমছে এই ফুলের উৎপাদন, আগামী সময়ে দেখা যাবে তো এই দামী মশলা?January 10, 2024