বাংলাদেশের গণ অভ্যুত্থান আপাতত দৃষ্টিতে ছিল ছাত্র সমাজের কোটা বিরোধী আন্দোলেন। কিন্তু কেউই হয়তো বুঝতে পারে নি যে, এর পিছনে ছিল পাকিস্তানের বিভিন্ন জেহাদি গোষ্ঠী। ফলে হাসিনা সরকারের পতনের পরেই সেই কোটা বিরোধী আন্দোলেন রূপ নিলো ভারত বিরোধী ও হিন্দু বিরোধী আন্দোলনে। আর শুরু হলো হিন্দুদের উপর অত্যাচার। তাদের মূল শ্লোগান হয়ে উঠলো -‘হিন্দুরা বাংলাদেশ ছাড়ো।’ এর মধ্যেই বাংলাদেশকে ইসলামিক রাষ্ট্র ঘোষণা করার জন্য দাবিও উঠেছে। দাবি উঠেছে জাতীয় সংগীত ও জাতীয় কবি থেকে রবীন্দ্র-নজরুলকে বাদ দিতে হবে। বিশ্বের বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রতিবাদ আসতে শুরু করেছে বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর আক্রমনের প্রতিবাদে।
এই পর্যন্ত হয়তো আমরা সবাই জানি। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে হঠাৎ করে কোটা বিরোধী আন্দোলন কেন ভারত বিরোধী ও হিন্দু বিরোধী হয়ে উঠলো। এই নিয়েই একে একে ঝোলা থেকে বিড়াল বেরিয়ে পড়ছে। কয়েকদিন আগেই ইসকনের মহারাজ চিন্ময় মহারাজকে গ্রেফতারের পরে বাংলাদেশের এক সরকারি আধিকারিক আদালতে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, ইসকন একটি ধৰ্মীয় সন্ত্রাসবাদী সংগঠন। আর তার পরে বিষয়টা আরও স্পষ্ট হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শাহিদুজ্জমানের কথায়।
অন্তবর্তী সরকারকে তো জামাতের ‘পুতুল’ বলেও কটাক্ষ করছেন কেউ কেউ। সে কারণেই কী হিন্দু নির্যাতন নিয়ে সরকার চুপ? উঠেছে প্রশ্ন। আর কট্টরপন্থীরা কী চাইছে তার যেন একটা আঁচ পাওয়া গেল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকের গলায়। তিনি শনিবার এক আলোচনায় অধ্যাপক শাহিদুজ্জমান বললেন, “পরমাণুকরণ মানে এই নয় যে আমাদের পরমাণু শক্তি হতে হবে। পরমাণুকরণ মানে পুরনো শত্রু পাকিস্তানের সঙ্গে বন্ধুত্ব। পাকিস্তান বাংলাদেশের সবচেয়ে আস্থাভাজন শরিক। ভারত ও আওয়ামি লিগ চায় না আমরা এটা বিশ্বাস করি। এই দেখেই তো পাকিস্তানীদের বুকে আগুন জ্বলত। পাকিস্তান বাংলাদেশকে ভারতের দূত হিসাবেও দেখতে চায় না। তারা আমাদের ভারতের কাছ থেকে রক্ষা করার জন্য সবকিছু করতে পারে।” সোজা কথায়, এখন পাকিস্তান নাকি বাংলাদেশের সবথেকে বিশ্বস্ত বন্ধু। বোঝাই যাচ্ছে, দীর্ঘ পরিকল্পনা করেই পাকিস্তানের জেহাদি গোষ্ঠী একদিকে যেমন ছাত্রদের দিয়ে কোটা বিরোধী আন্দলেন করালো, তেমনই ইউনুসকে পুতুল বানিয়ে পাকিস্তানকে দিয়ে সরকার চালানো শুরু করেছে।