আজ, ১৫ নভেম্বর বিশ্বের অন্যতম ধর্মগুরু তথা শিখধর্মের প্রবর্তক গুরু নানকের জন্মদিন। সারা বিশ্বজুড়ে মহা আড়ম্বরের সঙ্গে পালিত হচ্ছে তাঁর জন্মজয়ন্তী।
গুরু নানকের জীবন সম্পর্কে জানা যায়, তিনি ঈশ্বরের হাত থেকে পেয়েছিলেন অমৃতের পাত্র। কাহিনী সূত্রে জানা যায়, ছোট থেকে গুরু নানকের মধ্যে ছিল প্রবল ঈশ্বর চিন্তা। অল্প বয়সেই নানকের বিয়ে হয় বলে জানা যায়। এরপরে কিছুকাল তিনি হিসাব রক্ষকের কাজও করেন। জানা যায়, প্রত্যেক দিন সূর্যোদয়ের ১ ঘণ্টা আগে গুরুনানক নদীতে স্নান করতেন। এরকমই একটি অভিজ্ঞতার কথা জানা যায়। ৩০ বছর বয়সে ভোরবেলায় নানক একদিন নদীতে স্নান করতে যান। সে সময় ঈশ্বরের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ হয় বলে কথিত রয়েছে। জানা যায়, ঈশ্বর তাঁকে এক কাপ অমৃত দিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন যে তোমার মাধ্যমে আমার নাম মহিমান্বিত হবে। তোমাকে যে অনুসরণ করবে আমি তাকে রক্ষা করব। জীবনে দাতব্য (দান), অজু (পরিচ্ছন্নতা), সেবা (সেবাকার্য) এবং সিমরান (প্রার্থনা)-র ওপর জোর দিতে নানককে পরামর্শ দেন ঈশ্বর। জানা যায়, গুরু নানক তাঁর বার্তা ছড়িয়ে দিতে হেঁটে ভ্রমণ করেছিলেন, শ্রীলঙ্কা, বাগদাদ, মধ্য এশিয়ার বিভিন্ন দেশ। ১৫৩৯ খ্রিস্টাব্দের ২২ সেপ্টেম্বর প্রয়াত হন। সারা বিশ্বের শিখ ধর্মের মানুষেরা প্রতি বছর ২২ সেপ্টেম্বর শোকের সঙ্গে,শ্রদ্ধার সঙ্গে গুরু ননকের প্রয়াণ দিবস পালন করেন।
গুরু ননকের কয়েকটি মহান বাণী এখনও মানুষের অনুসরণযোগ্য। তাঁর প্রধান কয়েকটি বাণী হলো –
১) “নিজের কাজ নিজে করো, কারও সাহায্য ছাড়াই কাজ করার চেষ্টা করো’’।
২) “কোনও কুসংস্কারকে মনে প্রশ্রয় দিও না। কারণ কুসংস্কার মনের মধ্যে ভয় তৈরি করে। জীবনকে অন্ধকারে ঠেলে দেয়।’’
৩) “যুক্তি দিয়ে ঈশ্বরকে ব্যাখ্যা করা যায় না, সারা জীবন ধরে চেষ্টা করলেও কেউ তা পেরে উঠবে না।’’
৪) “ঈশ্বর আর মানুষ আলাদা নয়, মানুষকে ভালোবাসলেই ঈশ্বরকে পাওয়া যায়।’’
৫) “প্রত্যেক ব্যক্তির তাঁর আয়ের ১০ ভাগ দাতব্য কাজে এবং ১০ ভাগ সময় ঈশ্বরের ভক্তির জন্য ব্যয় করা উচিত।’’