কালী পুজোর আগমনে শহর জুড়ে উৎসবের আমেজ। মন্দিরে মন্দিরে জ্বলে উঠছে আলো, শোনা যাচ্ছে ধুনুচি আর ঢাকের তাল। এই উৎসবের অন্যতম প্রধান উপাদান হল জবা ফুল। কিন্তু কেন শুধু জবা ফুলই মা কালীর প্রিয়? এর পিছনে কি কোনো ইতিহাস আছে?
জবা ফুলের রহস্য:
ধর্মীয় গ্রন্থ ও লোককথা অনুযায়ী, জবা ফুলের সঙ্গে মা কালীর এক গভীর সম্পর্ক রয়েছে।
- শক্তির প্রতীক: জবা ফুলকে শক্তির প্রতীক হিসেবে দেখা হয়। এর লাল রং রক্তকে প্রতিনিধিত্ব করে, যা জীবনের প্রাণশক্তির প্রতীক।
- ত্যাগ ও নিঃস্বার্থতা: জবা ফুলের পাপড়িগুলি সহজেই খসে পড়ে। এটি ত্যাগ ও নিঃস্বার্থতার প্রতীক।
- কালী মায়ের রূপ: জবা ফুলের রক্তিম রং মা কালীর রূপের সঙ্গে মিলে যায়। তাই তাকে দেবীর চরণে অর্পণ করা হয়।
- তন্ত্র সাধনা: তন্ত্র সাধনায় জবা ফুলের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। মনে করা হয়, এই ফুলের সাহায্যে দেবীর আরাধনা করলে সাধক সিদ্ধি লাভ করতে পারে।
লোকমুখে প্রচলিত কাহিনী:
একটি প্রচলিত কাহিনী অনুযায়ী, একবার দেবী কালী পৃথিবীতে আসেন। তিনি এক গৃহস্থের বাড়িতে আশ্রয় নেন। সেই গৃহস্থী তার সন্তানের অসুখে বিপন্ন হয়ে পড়েন। দেবী কালী তাকে সাহায্য করার জন্য আসেন। কিন্তু সেই গৃহস্থীর বাড়িতে তেমন কোনো ফুল ছিল না। শেষ পর্যন্ত তিনি বাগান থেকে একটি জবা ফুল তুলে দেবীর চরণে অর্পণ করেন। দেবী প্রসন্ন হয়ে তার সন্তানকে সুস্থ করে তোলেন। সেই থেকে জবা ফুলকে দেবীর প্রিয় ফুল হিসেবে পূজো করা হয়।
বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে:
বিজ্ঞানীরা জবা ফুলের রাসায়নিক গঠন নিয়ে গবেষণা করেছেন। তাদের মতে, জবা ফুলে কিছু বিশেষ ধরনের রাসায়নিক উপাদান রয়েছে যা মানসিক শান্তি ও স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে সাহায্য করে।
সারসংক্ষেপ:
ধর্মীয় বিশ্বাস, লোককথা এবং বিজ্ঞানের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে জবা ফুলের গুরুত্ব স্পষ্ট। কালী পুজোতে জবা ফুল অর্পণ করা শুধু একটি রীতি নয়, এটি দেবীর প্রতি ভক্তির এক অঙ্গ।