রেশন দুর্নীতির মামলায় জেলবন্দি বনমন্ত্রী তথা প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় (বালু) মল্লিকের সম্পত্তির সন্ধানে ইডির তদন্তে নতুন মোড়। মঙ্গলবার অরণ্য ভবনে জ্যোতিপ্রিয়ের দফতরে তল্লাশি চালিয়ে ইডির আধিকারিকরা ১০ কোটি টাকার বেশি ব্যাঙ্ক আমানত ও জীবন বিমার নথি উদ্ধার করেন। এছাড়াও ওই অফিস থেকে কয়েক কোটি টাকার সম্পত্তির নথিও পাওয়া গিয়েছে। শুধু নথি নয়, মন্ত্রীর ঘর থেকে প্রায় সাড়ে ছ’শোর বেশি অলিখিত ‘নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প পেপার’ও উদ্ধার হয়েছে। সব মিলিয়ে বাজেয়াপ্ত হওয়া আমানত, বিমা ও সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় ৩০ কোটি টাকার বলে দাবি করেছেন তদন্তকারীরা।
রেশন বণ্টন দুর্নীতির মামলায় ধৃত জ্যোতিপ্রিয় ২০২১ সাল থেকে বনমন্ত্রীর পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। ইডির দাবি, রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পরেই জ্যোতিপ্রিয় খাদ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পান এবং দুর্নীতির জাল ছড়িয়ে দেন। ২০২১ সালে তৃতীয় বার ক্ষমতায় ফিরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জ্যোতিপ্রিয়কে খাদ্য দফতর থেকে সরিয়ে বন দফতরে পাঠান। ইডি আধিকারিকদের দাবি, বন দফতরে এসেও খাদ্য দফতরের উপরে নিয়ন্ত্রণ আলগা করেননি জ্যোতিপ্রিয় এবং নাগাড়ে রেশন বণ্টনে অনিয়ম চালিয়ে গিয়েছেন। তাই, অরণ্য ভবনে ন’তলায় বন দফতরে মন্ত্রীর দফতরে হানা দিলে নথি পাওয়া যেতে পারে বলে দাবি করেছিলেন তদন্তকারীরা। তাঁদের সেই দাবিই মঙ্গলবার সত্যি হয়েছে।
তদন্তকারীদের দাবি, ব্যাঙ্ক আমানত ও জীবন বিমা অধিকাংশই জ্যোতিপ্রিয়র নামে রয়েছে। বনমন্ত্রীর পারিবারিক সদস্য এবং অন্য নামেও বহু সম্পত্তির নথি উদ্ধার রয়েছে বলে ইডি সূত্রের দাবি। ওই সব নথি প্রাথমিক ভাবে যাচাই করে তদন্তকারীরা দাবি করেছেন, ২০২১ সালের পরে ব্যাঙ্ক আমানত, জীবন বিমা এবং সম্পত্তিতে টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছিল।
মঙ্গলবার অরণ্য ভবনে মন্ত্রীর ঘরের তালা খুলে তল্লাশির পাশাপাশি মন্ত্রী-ঘনিষ্ঠ আধিকারিকদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। বুধবারেও মন্ত্রীর আপ্ত-সহায়ককে ডেকে ইডি জিজ্ঞাসাবাদ করেছে বলে বন দফতর সূত্রের খবর।